সামাজিক সুরক্ষা জাল হলো এমন একটি সামষ্টিক প্রচেষ্টা যা দরিদ্র ব্যক্তি এবং বিপদগ্রস্থ পরিবারের কল্যাণে কাজ করে। সামাজিক পেনশন, পণ্য ও খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ, নগদ সাহায্য, ফি মওকুফ,কর্মসংস্থানের সুযোগ, চাকরি পরিবর্তনের সময় আর্থিক সহায়তা, স্কুল মিল প্রোগ্রামের মতো ইত্যাদি উদ্যোগ সামাজিক সুরক্ষা জালের পু্রনো উদাহারণ। সামাজিক সুরক্ষা জাল দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে কার্যকরভাবে কাজ করে।

বৈশ্বিক পরিস্থিতি
যদিও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সামাজিক সুরক্ষা নেটের প্রয়োজনীয়তা বেশি, তারপরও ওইসিডি (অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) এর অন্তর্ভুক্ত উন্নত দেশগুলো গড়ে মোট জিডিপির প্রায় ২.৭% সামাজিক সুরক্ষা জাল কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ করে। অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলো গড়ে ১.৫% ব্যয় করে।
সামাজিক সুরক্ষা জালের আঞ্চলিক বৈষম্যও আছে। ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলো তাদের জিডিপির সর্বোচ্চ অনুপাত সামাজিক সুরক্ষা নেটের জন্য বরাদ্দ করে। এরপর যথাক্রমে সাব-সাহারান আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান, পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা এবং অবশেষে দক্ষিণ এশিয়া- এই ক্রমানুসারে ব্যয় করে। তাছাড়া, বিভিন্ন অঞ্চল বিভিন্ন ধরনের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়।
প্রভাব
বিশ্ব ব্যাংকের অনুমান অনুসারে, সামাজিক সুরক্ষা জাল বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৬% দারিদ্র্য ব্যক্তিকে চরম দারিদ্র্য থেকে উত্তরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে এবং আরও ৮% ব্যক্তির আপেক্ষিক দরিদ্রতা হ্রাস পেয়েছে। এছাড়াও, সুরক্ষা জাল বৈষম্য কমাতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে। ৪৫% চরম দারিদ্র্য এবং ১৬% আপেক্ষিক দারিদ্র্য ব্যবধান হ্রাস পেয়েছে। এই সাফল্য সত্ত্বেও, বিশ্ব ব্যাংক পরামর্শ দেয় যে প্রকৃত প্রভাব আরও বড় হতে পারতো।
সীমাবদ্ধতা
দরিদ্রতম দেশগুলোতে মাত্র ২০% দারিদ্র জনগোষ্ঠী সামাজিক সুরক্ষা জালের আওতায় এসেছে। সকল সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে এর অন্তর্ভূক্ত করা অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে আগের তুলনায় দারিদ্র্য এবং বৈষম্য হ্রাস তুলনামূলকভাবে কমেছে।